আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ৩রা নভেম্বর ২০২৫ রোজ সোমবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ টি আসনের জন্য বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করেন।বাকি ৬৩ টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।এই ৬৩ টি আসনের মধ্যে রয়েছে গাজীপুর-৬ আসনের নাম।
কেনো গাজীপুর-৬ আসন থেকে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয় নাই এবং এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাই বা কে? বিস্তারিত জানবো আজকের পর্বে।২০২৫ সালের সরকারি ভাতা কবে দিবে?
গাজীপুর ৬ আসন
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সীমানা পুনঃনির্ধারণের যে কার্যক্রম শুরু হয় তা বাস্তবায়নের ফলে গাজীপুরবাসী পেল একটি নতুন সংসদ আসন (গাজীপুর-৬)। যা কিনা বহু বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের প্রত্যাশা ছিল।এই আসন বৃদ্ধির কারণে অধিভুক্ত এলাকাগুলোর উন্নয়ন,নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও সাধারন জনগণের সেবা পাওয়া আরও সহজ হবে।তাদের দাবি গুলো সংসদে আরও জোড়ালো ভাবে উপস্থাপন করানো যাবে।
মহান জাতীয় সংসদের ১৯৮ তম এই আসনটি গাজীপুর সিটির ৩২ থেকে ৩৯ নং ওয়ার্ড ও ৪৩ থেকে ৫৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।মাঝখানের ৪০,৪১ ও ৪২ নং ওয়ার্ড গাজীপুর-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে। টংগী,গাছা ও পূবাইলের কিছু অংশ গাজীপুর-৬ আসনের অধীনে পড়েছে।এই এলাকাগুলো আগে গাজীপুর ১ ও ২ এর অধীনে ছিল।গাজীপুর ৬ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ ৪০ হাজার।
গাজীপুর-৬ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী কারা
নতুন গঠিত গাজীপুর-৬ আসনটি টংগী,গাছা ও পূবাইল থানার আংশিক আলাকা নিয়ে গঠিত।রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটি ঢাকার উত্তর দিকের সীমানার কোল ঘেষে অবস্থিত।নবনির্মিত এই আসনটিতে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী হলো মোট ৮ জন।তারা হলেন-
- হাসান উদ্দিন সরকার (গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি)
- সালাহ্উদ্দিন সরকার (গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি)
- প্রভাষক বসির উদ্দিন (টংগী থানা বিএনপির আহ্বায়ক)
- রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু (গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক)
- গাজী সালাহউদ্দিন (টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক)
- আরিফ হোসেন হাওলাদার (কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি)
- সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন (টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপি’র সভাপতি)
- মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভাট (গাজীপুর মহানগর যুবদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক)
গাজীপুর-৬ আসন থেকে কেনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয় নাই
মূলত একই আসন থেকে বিএনপির প্রায় ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন নেওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছেন এবং যতজন প্রার্থী মনোনয়ন চেয়েছেন তারা সবাই বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় প্রভাবশালী নেতা।আবার এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে যেন সে অন্যান্য বিরোধীদলের যেসব প্রার্থী আছে তাদের সাথে ভোটের মাঠে টেক্কা দিতে পারে।
এসব মিলিয়েই গাজীপুর ৬ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করতে দলটির নীতি নির্ধারকরা একটু দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে আছে।তাই এখন পর্যন্ত এই আসনের জন্য প্রার্থীর নাম স্থগিত রাখা হয়েছে।তাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন – কে হবে গাজীপুর ৬ আসনের প্রথম এমপি ?
গাজীপুর-৬ আসন থেকে বিএনপির কোন প্রার্থী এগিয়ে
নবগঠিত এই আসনে বিএনপি থেকে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী।এখন প্রশ্ন হলো তাদের মধ্যে কে আছেন সবচেয়ে এগিয়ে?
এই দৌড়ে একেবারে শুরুতেই রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গাজীপুর ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার।এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার দীর্ঘদিনের রাজনীতি,দলের জন্য আমার ভূমিকা ইত্যাদি বিবেচনা করলে দল আমাকেই নমিনেশন দেবে।”
এরপরই মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন গাজীপুরে বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার।সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় এবং দুঃসময়ে দলের পাশে থাকায় গাজীপুরে তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।তিনি বলেন-“আমি আশাবাদী যে দল আমাকে নমিনেশন দেবে এবং ৬ আসনের যারা ভোটার আছে তারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে।”
মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় এর পরই রয়েছেন টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন।মাতৃবাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন- “নমিনেশন পাওয়ার জন্য আমি আশাবাদী।দলের দুর্দিনে টংগীর রাজপথে আমরা ছিলাম এবং একই সাথে দল যাকে নমিনেশন দেবে আমি দলের পক্ষেই কাজ করব।”
এদিকে প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন আরো এক প্রার্থী টঙ্গী পূর্ব থানার বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাহউদ্দিন।এক বক্তব্যে এই নেতা বলেন-“বিএনপি বৃহৎ একটি দল। এত বড় দলে যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারে, আমিও মনোনয়ন প্রত্যাশী।যদি আমাকে সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে গাজীপুর ৬ আসনের সকল জনগণের জন্য সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে কাজ করব।”
এছাড়াও প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন প্রভাষক বসির উদ্দিন,জসিম উদ্দিন ভাট ও আরিফ হাওলাদার।
নবনির্মিত এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের রয়েছে লম্বা তালিকা।এত লম্বা তালিকা থেকে শেষ পর্যন্ত একজন প্রার্থী সিলেক্ট করাই হলো বড় চ্যালেঞ্জ।
